০৫ জুন ২০১৯ইং (দেশপ্রেম রিপোর্ট): বরাবরের মতো এবারও কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় অনুষ্ঠিত হলো দেশের বৃহত্তম ঈদের জামাত। লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হওয়া ঈদের জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি-শান্তি কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। আজ বুধবার সকাল ১০টায় ঈদ জামাত শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রবল বৃষ্টির কারণে সময়মতো জামাত করা সম্ভব হয়নি। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেই শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে জড়ো হন লাখো মুসল্লি। তারা ছাতা মাথায় দিয়ে এক সঙ্গে নামাজ আদায় করেন। পরে কিছুটা দেরিতে নামাজ শুরু হয়। সকাল ১১টা ১০ মিনিটের দিকে মোনাজাত শেষ হয়।
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসঊদ ২২ মিনিট দেরিতে ঈদগাহ ময়দানে পৌঁছান। কর্দমাক্ত মাঠ আর কয়েক ঘন্টার টানা বৃষ্টিতে মুসল্লিরা ¯œাত হলেও আল্লাহর সান্নিধ্য ও অনুকম্পা পেতে ব্যাকুল ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য তা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। বৃষ্টিতে ভিজেই বৃহত্তম এ ঈদ জামাতের নামাজ আদায় করেছেন। সকাল ১০টা ২৪ মিনিটে প্রতিকূল পরিবেশ ও বৃষ্টি উপেক্ষা করে শোলাকিয়ার দেশের সর্ববৃহৎ এ ঈদ জামাতে নামাজে শরিক হন তাঁরা।
শোলাকিয়া মাঠের রেওয়াজ অনুযায়ী, জামাত শুরুর আগে শর্টগানের ছয়টি ফাঁকা গুলি ছোঁড়া হয়। জামাত শুরুর ৫ মিনিট আগে তিনটি, তিন মিনিট আগে দুটি এবং এক মিনিট আগে একটি গুলি ছুঁড়ে নামাজের জন্য মুসল্লিদের সংকেত দেয়া হয়।
মাঠের সুনাম ও জনশ্রুতির কারণে ঈদের বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই কিশোরগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও সারাদেশের বিভিন্ন জেলা তথা ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, গাজীপুর, নরসিংদী, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, সিলেট, জামালপুর, খাগড়াছড়ি, শেরপুর, যশোর, খুলনা ও চট্রগ্রামসহ অধিকাংশ জেলা থেকে শোলাকিয়ায় মুসল্লিদের সমাগম ঘটে। এদের অনেকে ওঠেন হোটেলে, কেউবা আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে ও মাঠ পরিচালনা কমিটির ব্যবস্থাপনায় শোলাকিয়া ঈদগাহ সংলগ্ন কুমুদিনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। আবার অনেকেই কোথাও জায়গা না পেয়ে রাত কাটান জেলা সদরের বিভিন্ন মসজিদে। ঈদের দিন শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে অংশগ্রহণকারী মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে চলাচল করেছে ২টি স্পেশাল ট্রেন। একটি ট্রেন ভৈরব থেকে সকাল ৬টায় ছেড়ে আসে এবং অন্যটি ময়মনসিংহ থেকে সকাল পৌনে ৬টায় ছেড়ে আসে।
২০১৬ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহের কাছে পুলিশের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার বিষয়টি মাথায় রেখে এবার নেয়া হয় নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয় র্যাব। মোতায়েন ছিল বিজিবিও।
বৃহত্তর এই জামাতকে কেন্দ্র করে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ায় স্বস্তিতে নামাজ আদায় করতে পেরেছেন মুসল্লিরা।
Leave a Reply